সুখী ও সুন্দর দাম্পত্য জীবন গঠনে স্বামী-স্ত্রী উভয়কে ভূমিকা রাখতে হয়। উভয়কেই পরস্পরপরের প্রতি শ্রদ্ধাশীল হতে হয়। একে অপরের অসুবিধা ও সমস্যাগুলো অনুধাবন করতে হয়।
সুখের সংজ্ঞা কি? সুখ কাকে বলে? কিভাবেইবা সুখের সন্ধান পাওয়া যেতে পারে? এসব প্রশ্নের উত্তর গবেষকরাও খুঁজেছেন। খুঁজতে গিয়ে তাদের কাছে মনে হয়েছে, সুখকে পরিমাপ করা অত্যন্ত কঠিন। কিন্তু সুখ একটি মানবিক অনুভূতি। সুখ মনের একটি অবস্থা বা অনুভূতি যা ভালোবাসা, তৃপ্তি, আনন্দ বা উচ্ছ্বাস দ্বারা নিয়ন্ত্রিত হয়।
সংসারকে বলা হয় সুখের আধার। স্বামী-স্ত্রী, সন্তান-সন্ততি মিলেমিলে মধুর জীবন যাপনেই নিহিত থাকে সুখ। সাবেক মার্কিন প্রেসিডেন্ট আব্রাহাম লিংকন বলেছেন, ‘মানুষ যতটা সুখী হতে চায়, সে ততটাই হতে পারে। সুখের কোনও পরিসীমা নেই। ইচ্ছে করলেই সুখকে আমরা আকাশ অভিসারী করে তুলতে পারি।’
কথায় আছে, ‘সংসার সুখের হয় রমণীর গুণে/ গুণবান পতি যদি থাকে তার সনে’। কিন্তু পতির কী এমন গুণ থাকতে হবে, যা থাকলেই সংসারে থাকবে সুখ।
সম্প্রতি হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রফেসর আলেকজান্দ্রা বিলোওয়ান্ড এক গবেষণা প্রতিবেদনে দেখিয়েছেন, শুধু রমণীর গুণে নয়, সংসার সুখের হয় পুরুষের রোজগারে। ঘরের পুরুষ যদি ভালো আয়-রোজগার করেন তবে সংসারে সুখ বজায় থাকে। কারণ, তাতে করে সাংসারিক চাহিদা ঠিকঠাক মেটানো যায়। উল্টোটা হলেই অনেকক্ষেত্রে ঘটে বিপত্তি। এমনকি সংসারে ভাঙনও ধরে। ১৯৭০ সালে থেকে এ পর্যন্ত প্রায় ৬ হাজার ৩০০ দম্পতির ওপর গবেষণা চালিয়ে এমন বিশ্লেষণী প্রতিবেদন প্রকাশ করেছেন আলেকজান্দ্রা।
সুখের সংজ্ঞা দিতে গিয়ে মার্কিন লেখক ও অধ্যাপক ডেল কার্নেগি বলেছেন, ‘একটি সুখের সংসার ধ্বংস করার জন্য শয়তান যতগুলো অস্ত্র আবিষ্কার করেছে তার মধ্যে মারাত্মক অস্ত্র স্ত্রীর ঘ্যানর ঘ্যানর।’
কার্নেগির কথায় যুক্তি আছে নিশ্চয়ই। কিন্তু স্ত্রী ঘ্যানর ঘ্যানর তখনই করে, যখন সংসারে আর্থিক টানাপোড়েন দেখা দেয়। যখন সব চাহিদা চাওয়া অনুযায়ী পূরণ হয় না। তবে সব সংসারে সব স্ত্রীর ক্ষেত্রে এমনকি প্রযোজ্য নয়। ব্যতিক্রমও আছে বটে।
বিশ্বজুড়ে বাড়ছে বিবাহবিচ্ছেদ। আর এই বিবাহবিচ্ছেদের পেছনেও পুরুষের কম রোজগার কিংবা বেকারত্বকেই প্রতিবেদনে বড় অংশে দায়ী করা হয়েছে।
তবে সর্বোপরি এটা নিশ্চিত যে, জীবনের জন্য টাকা-পয়সা প্রয়োজন। তবে শুধুমাত্র অর্থই সুখের দিতে পারে না। এজন্য রমণীর গুণও সমানভাবে অপরিহার্য।আলেকজান্দ্রা বিলোওয়ান্ড’র গবেষণার যৌক্তিকতা অস্বীকার করা যায় না। তবে সুখের জন্য স্বামী-স্ত্রী কিংবা সংসারের অন্যান্য সদস্যদের মধ্যে ভালো বোঝাপড়া থাকাও জরুরি।
দৈনিক কলম কথা সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।